এখানে দেখি সবাই লাইনে দাঁড়িয়ে। বুঝতে পারলাম টিকেট কাটতে হবে।
২ ইউরো দিয়ে টিকেট কেটে সামনে এগুতেই সারি সারি চেয়ার সাজানো । প্রচন্ড রোদ থাকা স্বত্বেও সামনের দিকের চেয়ারগুলু ইতিমধ্যে ফিলাপ হয়ে গেছে।
টিকেট কেটে ঢুকার পরেই তার পাশে দেখতে পেলাম আর একটা কাউন্টার , যেখান থেকে অগ্রিম টাকা দিয়ে টোকেন কিনে নিতে হবে খেলা দেখার সময় কিছু খেতে চাইলে বা ড্রিঙ্কস কেনার জন্য এই ব্যবস্তা। ১০ বা ২০ ইউরো এর টোকেন। বুদ্ধিটা ভালই। আগ্রিম ১০/২০ ইউরো এর টোকেন কিনে নিয়ে তার পর যাই কেনের তার সম পরিমান টাকা তাঁরা এই টোকেন থেকে কেটে নেবে। আপনি যদি আপনার কেনা টোকেনের ১০/২০ ইউরো খরচ করতে না পারেন তা হলে প্রব্লেম নাই। যাবার সময় আপনার বাকি টাকা ফেরত দেবে।
ডিঙ্কস আর খাবারের জায়গা আলাদা, এটা হচ্ছে ড্রিঙ্কস স্টেশন। দাম একটু বেশি, মিনারেল ওয়াটার, কোলা থেকে শুরু করে বিয়ার, ওয়াইন সবই আছে
ফুটবল খেলা দেখা হবে কিন্তু সেখানে আড্ডা আর ড্রিঙ্কসের ব্যবস্তা থাকবে না তাতো হতে পারে না। তাইতো সারি সারি চেয়ারে পরে বড় বড় ছাতার নিচে গোল টেবিলের চারআসে চেয়ার সাজানো আছে আড্ডা আর খাবার দাবারের জন্য।
খেলার শুরু হতে এখনও ঘন্টা খানেকের মত সময় রয়েছে আর এরই মাঝে আড্ডা আর হাল্কা নাস্তা চলছে
খেলা চলছে হাফ টাইমের কাছাকাছি কিন্তু কোন গোল হয় নি এখনো যখনি কোন গোলের চান্স মিস হয় তখনই চারপাস থেকে আফসোসের উচ্চারন আসতে থাকে,আর সাথে সাথে হাত তালিতো আছেই,কিছু কিছু পাব্লিক আবার উঠে দাঁড়িয়েও যাচ্চে উত্তেজনায়।
হাফ টাইম পেরিয়ে ৫৪ মিনিটে শেষ এখনো কোন গোল হল না, ৫৪ মিনিটে মুলার যখন অবশেষে সেই প্রতাশিত গোলটি করল তার পরের কিছু মুহুর্ত
খেলার বাকি সময়টা কেটে গেল গোলের সম্ভবনা তৈরির মাধ্যমে ।
প্রচন্ড রোদের মধ্যে খেলা দেখতে দেখতে মাথা গরম হয়ে গেছিল তাই এই ব্যবস্তা
আর দেখতে দেখতে ৯০ মিনিটও শেষ হয়ে গেল। আর জার্মানও জিতল ১-০ গোলে। এবার ফেরার পালা।।তাই আস্তে আস্তে বেরিয়ে যাচ্ছে সবাই
জার্মানিতে রাস্তায় সাধারনত বিনা প্রয়োজনে কেউ হর্ন বাজায় না । আর এটা অভদ্রততা ও আইনত দন্ডনীয় অপরাধ । কিন্তু খেলা শেষে এই নিয়মটা সিথীল হয়ে যায় । সবাই হর্ন বাজিয়ে আর পতাকা উড়িয়ে আনন্দ করতে করতে বাসায় ফিরছে। সারা রাস্তা জুড়েই এমন চিত্র দেখা যায় । অনেকেই বলে যে জার্মানিতে এক সাথে হর্ন বাজানো আর আনন্দ করে ফেরার এই চিত্র নাকি চার বছর পর পর শুধু বিশ্বকাপের সময় দেখা যায়।