বৃহস্পতিবার, ২ অক্টোবর, ২০১৪

প্রবাসে পরিভ্রমন ৯- ক্যাবল কারে চড়ে জার্মানীর দীর্ঘতম ও পৃথিবীর প্রথম ক্যাবল লাইন পরিভ্রমন

জার্মান জীবনের প্রথম ৯টি মাস যে শহতে কেটেছিল ব্যাস্ততা ও বাস্তবতার কারনে সে শহরটি ও ভালকরে দেখা হয়নি। সুইজারল্যান্ডের সীমান্তবরতী  ফ্রাইবুর্গ শহরটি ট্যুরিস্টদের সমাগমে মুখর থাকে সারা বছরই । বলা হয়ে থাকে এ শহরে নাকি সবচেয়ে বেশি সময়ে সুর্যের আলো থাকে, শীতকালে যেহেতু প্রচুর ঠান্ডা ও তুযার পরে তাই সুর্যের আলো একটি গুরুত্বপুর্ব বিষয়। বছর খানেকের বেশি হয়ে গেছে সে শহরটি ছেড়ে এসেছি, কিন্তু পুরুনো বন্ধুবান্ধবদের সাথে দেখা সাক্ষাতের জন্য মাঝেই মাঝেই সে শহরে যাওয়া হয়। কিন্তু ঘুরে দেখা হয় তেমন একটা। নতুন সেমিস্টারে এডমিশন নিয়ে পুরুনো বন্ধুরা ইত্যিমধে সে শহর ছেড়ে অন্য শহরে মুভ করার অদূর ভবি্য্যরে সে শহরে যাওয়া হবে না, সেই ভেবে এক বদ্ধুকে যে কিনা কয়েকদিনের মধ্যে এ শহর ছেড়ে প্রায় ৭০০ কিলোমিটার দুরের আরেক শহরে চলে যাচ্চে তাকে প্রস্তাব করলাম এ শহরের কিছু আকর্যণীয় স্থানে ঘুরে দেখার । আর সেই প্ল্যান থেকেই Schauinslandbahn শাওইন্যাসবান এ চড়ার প্যান। ইতিহাস বলে এটি পৃথীবির প্রথম মিউচুয়াল কেবল অপারেশনের কেবল কার। আর জার্মানীর দীর্ঘতম ক্যাবল কার লাইন।

যেটি জার্মানির Black Forest এলাকায়  Baden-Wurttemberg রাজ্যের অবস্তিত। ৩.৬ কিলোমিটার দীর্ঘ এ ক্যাবল লাইনে করে ২০ মিনিটে প্রায় ১২২০ মিটার উপরে Schauinsland পাহাড়ের চুড়ায় পৌছা যায় এ কারে করে। 17 July 1930 সালে চালুর পরে  1987/88 সালের পর রিকন্টাকশন করে ৪ জনের বেশি লোকজন ধারন ক্ষমতা সম্পন্ন জার্মানির প্রথম অটোমেটিক কেবলকার এ রুপান্তর করা হয়।

1 January 2009 সাল থেকে ১০০% গ্রিন এনার্জি ব্যবহার করে এটি পরিচালনা করা হচ্ছে।
অনেকতো কথা হল এবার চলুন ছবিতে ঘুরে আসি Schauinsland আর ব্ল্যাক ফরেস্টের প্রাকৃতিক সোন্দর্যে।

আমাদের যাত্রা শুরু হচ্ছে ফ্রাইবুর্গ শহর থেকে। আমরা প্রথমে ট্রামে তার পর বাসে করা আমাদের নিদ্রিস্ট গন্ত্যবের যাব। এইতো দেখা যাচ্ছে আমাদের কাঙ্খিত ট্রাম।


আমি উঠছি উঠে দেখি আপনাদের জন্য যায়গা আছে কিনা?


হ্যা এখনো অনেকগুলো ছিট ফাকা আছে তাই তাড়াতাড়ি উঠে ফাকা সিটে নিজের দখল নিন। তা না হলে দাঁড়িয়ে যেতে হবে।

মাত্র মিনিট দশেকের পথ আর রাস্তার দুপাশের সবুজের সমারহ চারদিকে শুধু সবুজ আর সবুজ।

নিজেদের মাঝে টুকটাক গল্প আর রাস্তার দুপাশের ব্ল্যাক ফরেস্টের অপরুপ সৌন্দর্য দেখতে দেখতে কখনযে আমাদের ট্রেনের শেষ গন্ত্যবে চলে এসেছি টেরই পাওয়া যায় না।

এবার ট্রেন থেকে নেমে বাসে উঠতে হবে। এইতো আমাদের বাস দেখা যাচ্ছে। আর ২ মিনিট পরেই ছাড়বে তাই তাড়াতাড়ি করে বাসে উঠে পড়ুন।


উচু নিচু আর আকা বাকা পথ পেরিয়ে এগিয়ে যাচ্ছে আমাদের বাস। মিনিট ১৫ এর মধ্যেই আমরা আমাদের গন্ত্যবে চলে এসেছি। এবার নেমে পড়ুন কারন এটাই বাসের শেষ স্টপেজ না তাই তাড়াতাড়ি নেমে পড়ুন।

এইতো আমাদেরকে স্বাগতম জানাছে

সবাই আসছেতো নাকি কেউ বাসে রয়ে গেছে। সবাই থাকলে আর দেরি না করে চলুন ঢুকে পরি।

দেয়ালে এলাকার ম্যাপ আর কিছু ইনফো দেয়া আছে, সেগুলো দেখতে দেখতেই সামনে এগূনো যাক।

এইতো সামনে টিকেত কাউন্টার দেখা যাচ্ছে।পাশেই টিকেটের দাম সহ লিস্ট । অনেকেই ক্যাবেল কারে করে শুধু উপরে গিয়ে তার পরে বাইকে করে বা পায়ে হেটে নিচে নাম। ৩.৫ কিলোমিটার পথা তাও পাহারী পথ তার উপরে আমরা সংখ্যায় অনেকে তাই আমরা যাওয়া ও আসার টিকেট কাটি।

১২ ইউরো লাগবে টিকেটের জন্য । মজার ব্যাপার হল আমরা যে ট্রাম ও ট্রেনে এসেছি সেই কোম্পানিই এই ক্যাবেল কার সার্ভিস প্রোভাইড করে তাই আমরা যেহেতু ট্রামের টিকেট কেটে এসেছি তাই আমাদের ডিসকাউন্ট প্রাইজ ৯ ইউরো।

এবার তাহলে সামনে যাওয়া যাক

এইতো এন্ট্রেন্স দেখা যাচ্ছে চলুন তাহলে ভেতরে ঢুকা যাক


টিকেটযে কাটলাম এইটা আবার স্ক্যান করে ভেতরে ঢুকতে হবে


আমাদের ফ্রেন্ড আগে যাচ্ছে সে তার টিকেট স্ক্যান করে ঢুকতেছে

সো আমরা ঢুকে পরলাম ক্যাবল কারে

এই পথে আমাদের ক্যাবল কার বেরিযে যাবে

যাত্রা হল শুরু


আমরা ইতিমধ্যে কিছু দূর এসে গেছি। এই যে ছোট ঘরটা দেখা যাচ্ছে সেখান থেকে আমাদের যাত্রা শুরু হছেছিল। 

এবার আর কোন কথা হবে না চুপচাপ ব্যাক ফরেস্টের প্রাকৃতিক সৌন্দর্য দেখার পালা
 চার পাশের প্রকৃতি
 নিচের পাহারের মাঝখানে আকাকাপা পথ

 ২ পাশের ২ লাইন ধরে একের পর এক ক্যাবল কার চলে যাচ্ছে




 নিচের দৃশ্য










 চলতে চলতে প্রায় ২০ মিনিট সময় পেরিয়ে আমরা আমাদের গন্ত্যবের শেষ প্রান্তে চলে এসেছি। এখানে একটা রেস্ট্রুরেন্ট ও  আছে। আর ব্ল্যাক ফরেস্টের ভেতরে কোথায় কোথায় ট্র্যাকিং এ যেতে পারবেন তারও প্ল্যান দেয়া আছে এখান।

 আমার এনার্জি নাই তাই আমি এই রেস্ট্রুরেন্টে একটু সময় থেকে আবার ব্যাক করব । ততক্ষনে আপনারা আশে পাশ থেকে ঘুরে আসতে পারেন। মনে রাখবেন লাস্ট ক্যাবল কার ৬ টায় তাই বিকাল ৬ টার আগে ফেরত আসবেন আশা করি । তা না হলে পায়ে হেটে নিচে নামতে হবে কিন্তু

এইতো নিচে ফ্রাইবুর্গ শহর ও তার আশে পাশের এলাকা দেখা যাচ্ছে


এবার তাহলে ফেরার পালা । যে পথে এসেছি সে পথেই ফেরত যাব। আসার সময় ছবি তুলতে তুলতে চারপাশটা ক্যামেরার চোখে দেখেছি এবার না আর কোন ছবি নয় শুধু প্রকৃতিকে নিজের চোখে দেখব।  আর আপনাদের জন্য ইউটিউভ থেকে দুটো ভিডিও দিচ্ছি যেখানে চারপাশের প্রকৃতিকে সুন্দর করে তুলে আনা হয়েছে । একটা ভিডিও সামারে আর একটা উইন্টারের।


এবার তাহলে দেখুন উইন্টারে তুযারের মাঝে ব্ল্যাক ফরেস্টের সুন্দর্য্য

ইতিমধ্য আমরা চলে এসেছি। এবার বিদায় নেবার পালা। আবার দেখা হবে আগামী কোন গন্ত্যবে । সবাই ভাল থাকবেন। ধন্যবাদ


কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন