জ্যাক মা অনলাইনভিত্তিক পৃথিবীর অন্যতম বড় কোম্পানি আলিবাবা ডটকমের প্রতিষ্ঠাতা ও চেয়ারম্যান। তাঁর আসল নাম মা ইয়ুন, জন্ম চীনের জিজিয়াং প্রদেশে ১৯৬৪ সালের ১০ সেপ্টেম্বর। ফোর্বস ম্যাগাজিনের হিসেবে জ্যাক মা পৃথিবীর ৩৩ তম শীর্ষ ধনী, তাঁর মোট সম্পদের পরিমাণ ২১ দশমিক ৬ বিলিয়ন ডলার। ২৩ জানুয়ারি ২০১৫ সুইজারল্যান্ডের দাভোসে অনুষ্ঠিত ওয়ার্ল্ড ইকোনমিক ফোরামে তিনি এই বক্তব্য দেন।

আমাদের কোম্পানি আলিবাবার আইপিওর মূল্যের পরিমাণ বেশ ছোটই, মাত্র ২৫ বিলিয়ন। আমরা সারা পৃথিবীর অন্যতম বড় মার্কেট ক্যাপিটাল কোম্পানি এখন। আমার দল আর আমাকে আমি মাঝেমধ্যেই বলি, এটা কি সত্য কিছু? আমরা ততটা বড় নই, যতটা দেখায়। বছর খানেক আগেও মানুষ বলত, আলিবাবার ব্যবসার মডেল ভয়ংকর। আমাদের চেয়ে অ্যামাজন ভালো, গুগল অসাধারণ বলে সবাই ভাবত। আসলে তখন আলিবাবার মতো ব্যবসার মডেল যুক্তরাষ্ট্রে ছিল না বলেই আমাদের নিয়ে সবাই এমনটা বলত। আমি নিজেকে ও অন্যদের বলতাম, লোকজন যা ভাবে, আমরা তার চেয়ে ভালো। কিন্তু এখন সবাই বদলে গেছে, আমাদের অনেক বড় বলে ভাবে সবাই। আমি সবাইকে বলতে চাই, আমরা বড় কেউ নই। আমরা ১৫ বছরে পা রাখা একটি কোম্পানি মাত্র। এই কোম্পানির জন্য ২৭ বা ২৮ বছরের কিছু তরুণ এমন কিছু কাজ করছেন, যা কিনা মানুষ এর আগে কখনো চেষ্টা করেনি।
১৯৬৪ সালে আমার জন্ম। চীনে তখন সবে সাংস্কৃতিক আন্দোলন শেষ হয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির জন্য যে পরীক্ষা দিতে হয়, আমি সেখানে তিনবার ফেল করেছিলাম। আমি আরও অনেকবারই ফেল করেছি। প্রাইমারি স্কুলে পরীক্ষার সময় দুবার ফেল করেছিলাম। মাধ্যমিক স্কুলেও তিনবার ফেল করেছি। আমার শহর হাংজুতে মাত্র একটি মাধ্যমিক স্কুল ছিল। বেশ খারাপ ছাত্র ছিলাম দেখে আমাদের প্রাথমিক স্কুল থেকে পড়া কাউকে মাধ্যমিক স্কুলে ভর্তি করতে চাইত না কেউ। বারবার ভর্তিতে প্রত্যাখ্যাত হয়ে বেশ উপকারই হয়েছিল আমার!
এখনো আমাকে মানুষ প্রত্যাখ্যান করে। বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির আগে আমি চাকরির জন্য চেষ্টা করেছিলাম। সেখানেও আমাকে ৩০ বারের মতো প্রত্যাখ্যাত হতে হয়। যখন চীনে কেএফসি আসে, তখন ২৪ জন লোক চাকরির জন্য আবেদন করেন। সেখানে ২৩ জন মানুষ চাকরির সুযোগ পান। শুধু একজনই বাদ পড়েন, সেই মানুষটি আমি। এমনও দেখা গেছে, পাঁচজন মানুষের মধ্যে চারজনের চাকরি হয়েছে, আর বাকি একজন আমি নেই। প্রত্যাখ্যানের পর প্রত্যাখ্যানই দেখেছি আমি। হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির জন্যও আবেদন করেছিলাম, সেখানে আমাকে প্রত্যাখ্যান করা হয়। ১০ বার লিখেছিলাম, ‘আমি ভর্তি হতে চাই।’ ১০ বার আবেদন করেছি, আর প্রতিবারেই প্রত্যাখ্যাত হয়েছি।
আমি ১২–১৩ বয়স থেকে ইংরেজি শেখা শুরু করি। চীনে তখন ইংরেজি শেখার সুযোগ ছিল না। কোনো ইংরেজি বইও পাওয়া যেত না। আমি যে হোটেলে বিদেশি পর্যটক আসত, সেখানে গিয়ে বিনে পয়সায় পর্যটকদের গাইডের কাজ করতাম। এরপর নয় বছর এই কাজ করে গেছি। তাতেই আমি পশ্চিমা ঢঙে ইংরেজি বলা শিখেছি। বিদেশি পর্যটকদের সঙ্গে ঘোরাফেরা আমার মনকে অনেক বড় করে দিয়েছে। স্কুল আর মা-বাবার কাছ থেকে যা শিখতাম, আর পর্যটকদের কাছ থেকে যা জানতাম, তা ছিল ভিন্ন। সে জন্যই আমি নিজের জন্য ভিন্ন এক অভ্যাস গড়ে তুলি নিজের মধ্যে। আমি যা দেখি, যা পড়ি, তা মন দিয়ে পড়ি-চিন্তা করি।
১৯৯৫ সালে যুক্তরাষ্ট্রে আসার পরে সিয়াটলে আমি প্রথম ইন্টারনেট ব্যবহারের সুযোগ পাই। ইন্টারনেটের গতি ছিল তখন ভীষণ ধীর। আমার বন্ধু আমাকে কম্পিউটারে ইন্টারনেট ব্যবহারের সুযোগ দেয়। ভয়ে কম্পিউটার স্পর্শ করিনি সেদিন। চীনে কম্পিউটারের দাম ছিল অনেক, নষ্ট হয়ে গেলে তখন দাম দিতে পারতাম না। বন্ধুর উৎসাহে ইন্টারনেটে সার্চ করি। সেবারই প্রথম ই-মেইল শব্দটি শুনি।
আমি ইন্টারনেটভিত্তিক কিছু করার চেষ্টা শুরু করি। সেই সময়টায় বেশ জনপ্রিয় একটি নাম ছিল ইয়াহু। আমাদের কোম্পানির নাম আলিবাবা দিতে চেয়েছিলাম। ১০ থেকে ২০ জনের বেশি মানুষকে জিজ্ঞেস করি, আলিবাবাকে তারা চিনে নাকি? সবাই বলেছিল ‘হ্যাঁ’। ‘আলিবাবা ও ৪০ চোর’ গল্পের কারণে সবাই আলিবাবাকে চিনে। তাই আমি এই নামই গ্রহণ করি।
শুরু থেকেই আমরা অনলাইনে বিশ্বাসের একটি জায়গা তৈরির চেষ্টা করে যাচ্ছি। মানুষ একে অন্যকে কম বিশ্বাস করে। এমন একটা পরিস্থিতিতে আমরা প্রতিদিন ৬০ মিলিয়ন বার লেনদেন করি। অনলাইনে মানুষ একজন আরেকজনকে চেনে না। আমি আপনাকে চিনি না, কিন্তু আমি আপনাকে পণ্য পাঠাই। আপনি আমাকে চিনেন না, কিন্তু আপনি আমাকে টাকা ঠিকই পাঠান। বিশ্বাসের জায়গাটা বড় করার চেষ্টা করে যাচ্ছি।
আলিবাবার সাফল্যের অন্যতম লুকানো সূত্র হচ্ছে আমাদের এখানে অনেক নারী কাজ করেন। শুধু আলিবাবায় ৪৭ শতাংশ কর্মী হচ্ছেন নারী। আমাদের সব অফিস মিলিয়ে ৫৩ শতাংশ কর্মী নারী। আমাদের ম্যানেজমেন্টে ৩৩ শতাংশ হচ্ছেন নারী, আরও উচ্চপর্যায়ে আছেন ২৪ শতাংশ। একুশ শতকে আপনাকে জিততে হলে অন্যকে স্বাবলম্বী করতে হবে। নারী-পুরুষ সবাইকে নিয়ে আপনাকে এগিয়ে যেতে হবে। আপনি অন্যের অবস্থা উন্নতি করতে পারলেই আপনি সফল। চীনের ৮০ শতাংশ তরুণ সফল হয়েছেন শুধু কাজের গুণে। তাঁদের বড়লোক বাবা নেই বা ব্যাংকের লোন নেই; শুধু কাজ করেই তাঁরা সফল। জীবনে সফল হতে গেলে সুযোগের সদ্ব্যবহার করতে হবে। নিজের ওপর বিশ্বাস রেখে এগিয়ে যেতে হয়।
শুরুর দিকে আমাকে সবাই পাগল বলত। টাইম ম্যাগাজিনে আমাকে পাগল জ্যাক বলা হয়েছিল। আমার মনে হয় পাগল হওয়া ভালো। আমরা পাগল, কিন্তু আমরা নির্বোধ নই। কোনো একদিন আমি স্কুলের শিশুদের আমার কথা বলতে যাব। আমি তাদের বলতে চাই, নিজের মনকে বড় করো, নিজের সংস্কৃতিকে বড় করো। নিজের মূল্যবোধকে শক্ত করো, নিজের বুদ্ধির বিকাশ ঘটাও। তুমি যদি কিছু করতে চাও, তাহলে প্রত্যাশা করা শিখতে হবে।
সূত্র: ইন্টারনেট। ২৩ জানুয়ারি ২০১৫ সুইজারল্যান্ডে দাভোসে অনুষ্ঠিত ওয়ার্ল্ড ইকোনমিক ফোরামের ‘অ্যান ইনসাইট, অ্যান আইডিয়া উইথ জ্যাক মা’ নামের বিশেষ সেশনে দেওয়া বক্তব্যের নির্বাচিত অংশের অনুবাদ করেছেন জাহিদ হোসাইন খান
সূত্র: ইন্টারনেট। ২৩ জানুয়ারি ২০১৫ সুইজারল্যান্ডে দাভোসে অনুষ্ঠিত ওয়ার্ল্ড ইকোনমিক ফোরামের ‘অ্যান ইনসাইট, অ্যান আইডিয়া উইথ জ্যাক মা’ নামের বিশেষ সেশনে দেওয়া বক্তব্যের নির্বাচিত অংশের অনুবাদ করেছেন জাহিদ হোসাইন খান
http://www.prothom-alo.com/we-are/article/610159/%E0%A6%AA%E0%A7%8D%E0%A6%B0%E0%A6%A4%E0%A7%8D%E0%A6%AF%E0%A6%BE%E0%A6%96%E0%A7%8D%E0%A6%AF%E0%A6%BE%E0%A6%A8%E0%A7%87%E0%A6%B0-%E0%A6%AA%E0%A6%B0-%E0%A6%AA%E0%A7%8D%E0%A6%B0%E0%A6%A4%E0%A7%8D%E0%A6%AF%E0%A6%BE%E0%A6%96%E0%A7%8D%E0%A6%AF%E0%A6%BE%E0%A6%A8-%E0%A6%B9%E0%A7%9F%E0%A7%87%E0%A6%9B%E0%A6%BF
Blackjack - Casino & Poker Online
উত্তরমুছুনIf you enjoy table games like blackjack or 야구 분석 roulette, blackjack is 라이브배팅 a great game 가입머니 지급 사이트 to play. 아이 벳 25 There are also many 온라인포커 variations of the game, including one that's