শরিফুল হাসান | আপডেট: ০০:৪৮, জুন ১৮, ২০১৩ | প্রিন্ট সংস্কর
আম আর আম। গাছে গাছে ঝুলছে কাঁচা-পাকা আম। রাস্তার দুই ধারে যত দূর চোখ যায়, কেবলই আমের বাগান। ইচ্ছা করলেই মাটিতে দাঁড়িয়ে, এমনকি শুয়ে-বসেও ছোঁয়া যায়। চাইলে দু-একটা পেড়ে খেতেও পারবেন। যাঁরা এই অভিজ্ঞতা নিতে চান, তাঁরা এখনই চলে যেতে পারেন চাঁপাইনবাবগঞ্জ কিংবা রাজশাহীর আমের বাগানে। প্রখর এই রোদেও ছায়াঘেরা বাগানগুলোতে পাবেন স্নিগ্ধ, শান্তিময় এক পরিবেশ। দেখবেন বিস্তৃত বাগানে একের পর এক গাছ থেকে পাড়া হচ্ছে আম। ঝুড়িতে করে নিয়ে সেই আম তোলা হচ্ছে ভ্যানে। এরপর সেই ভ্যান যাচ্ছে হাটে। সেখানে সারি সারি মানুষ মণকে মণ আম বিক্রি করছেন। তবে ৪০ কেজিতে নয়, এখানে ৪৫ বা ৪৮ কেজিতে মণ ধরা হয়। কারণ, কিছু আম নষ্ট হয়ে যেতে পারে।
রাজশাহীর চারঘাট ও বাঘায় অনেক আমের বাগান থাকলেও আমবাগানের আসল মজা পেতে হলে চাঁপাইনবাবগঞ্জে যেতে হবে। এখানকার শিবগঞ্জ উপজেলাকে বলা হয় আমের রাজধানী। রাজশাহী শহর থেকে ৫০ কিলোমিটার দূরত্বে চাঁপাইনবাবগঞ্জ। সড়কপথে ঘণ্টা দেড়েক লাগবে। একসময় চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলার পুরোটাই নাকি ছিল আমের বাগান। এখনো শহরের আদালতপাড়া, পুলিশ সুপারের কার্যালয়, জেলা প্রশাসকের কার্যালয় এবং কলেজের পুরো অংশই আমবাগান। শহরটা ঘুরলে মনে হবে, আমবাগানের মধ্যেই যেন মানুষের বসতি। সদর উপজেলা ছাড়াও শিবগঞ্জ, ভোলাহাট ও গোমস্তাপুর—এই উপজেলাগুলোও আমবাগানের মধ্যে।
চাঁপাইনবাবগঞ্জ শহর থেকে বের হয়ে মহানন্দা সেতু পেরিয়ে শিবগঞ্জের দিকে রওনা দিলে রাস্তার দুই পাশে চোখে পড়বে হাজার হাজার আমের বাগান। শহর থেকে শিবগঞ্জের দূরত্ব মাত্র ১৭ কিলোমিটার। সঙ্গে গাড়ি থাকলে আধা ঘণ্টারও কম সময়ে পৌঁছে যেতে পারবেন। রাস্তায় যেতে যেতে চোখে পড়বে আমের ভ্যান, আমের গাড়ি, মানুষের হাতে আম, মাথায় আম।
শিবগঞ্জের সেনের বাগান, মোজাফফর মিয়াদের বাগান, কানসাটের রাজার বাগান, কানসাটের পাগলা নদীর পশ্চিম পারের চৌধুরীদের বাগানসহ আরও অনেক নামকরা আমের বাগান রয়েছে। চাইলে রাস্তার পাশের যেকোনো আমবাগানে ঢুকে যেতে পারবেন।

সারা বছর আমবাগানগুলোতে ব্যস্ততা থাকলেও এপ্রিল, মে, জুন, জুলাই—এই সময়টা আমবাগানে ঘোরার জন্য ভালো সময়। কারণ, চাইলে এই সময়ে আম খেতেও পারবেন। শিবগঞ্জে এসে আপনি যেকোনো বাগানে ঘুরতে পারবেন। বিশ্রাম নিতে পারবেন আমবাগানের মধ্যে থাকা ছোট্ট ছোট্ট মাচায়।
আমবাগান তো ঘুরলেন, আমের হাটে যাবেন না? শিবগঞ্জ ঘুরতে এসে কানসাট না যাওয়াটা বিশাল বোকামি। কানসাটেই সম্ভবত বাংলাদেশের সবচেয়ে বড় আমের হাট। এখানে যত দূর চোখ যায়, দেখবেন আমের বেচাকেনা। ফজলি, ক্ষীরসাপাত, ল্যাংড়া, গোপালভোগ, বোম্বাই, লক্ষ্মণভোগ, ফনিয়া, হিমসাগরসহ শত শত প্রজাতির আম। কিছুক্ষণ দাঁড়ালেই দেখবেন হাটে গাড়ি ঢুকছে, বের হচ্ছে, লোকজন আসছে-যাচ্ছে, মনে হবে এ যেন আমের স্বর্গ। দেখতে দেখতে ক্লান্ত হয়ে গেলে হাটের পাশের ছোট দোকানগুলোতে বসে খেতে পারবেন চাঁপাইনবাবগঞ্জের বিখ্যাত কালাই রুটি। এই হাট থেকে যত খুশি আম কিনতে পারবেন। শিবগঞ্জ থেকে কয়েক কিলোমিটার দূরেই সোনামসজিদ স্থলবন্দর। চাইলে সেখানেও একবার ঘুরে আসতে পারেন।
যেভাবে যাবেন

Wow! very informative post. Thank you very much for writing on this valuable topic. Keep it up, mate! matrimonial
উত্তরমুছুন