বুধবার, ১১ সেপ্টেম্বর, ২০১৩

Invitation of Nijhum Island (নিঝুম দ্বীপের হাতছানি)



লেখাটি এখান থেকে নেয়া হয়েছে
প্রমা সঞ্চিতা
প্রকাশ : ০৩ সেপ্টেম্বর, ২০১৩
উল্যাব অ্যাডভেঞ্চার ক্লাবের পক্ষ থেকে প্রতি সেমিস্টার শেষেই শিক্ষার্থীদের জন্য আয়োজন করা হয়ে থাকে একটি এক্সক্লুসিভ অ্যাডভেঞ্চার ট্যুরের। অ্যাডভেঞ্চার ট্যুরগুলো বৈশিষ্ট্যের দিক দিয়ে অন্য ট্যুরের চেয়ে বরাবরই আলাদা। এই ট্যুরের প্রধান শর্ত হল সব রকম আরামপ্রিয়তা থেকে শত হাত দূরে থাকতে হবে! কষ্টকর ও প্রতিকূল অবস্থার সঙ্গেও মানুষ কীভাবে মানিয়ে নিতে পারে সে শিক্ষাই পাওয়া যায় এই অ্যাডভেঞ্চার ট্যুরগুলোতে।
অ্যাডভেঞ্চার ক্লাবের সর্বশেষ ট্যুরটি ছিল নিঝুমদ্বীপে। ৯ এপ্রিল সন্ধ্যা ৬টায় প্রায় ৮০ সদস্যের একটি দল নিয়ে নিঝুমদ্বীপের উদ্দেশে যাত্রা শুরু করে চাঁদপুরগামী একটি লঞ্চ। এই ট্যুর ক্লাবের ৭৭ সদস্য ছাড়াও ছিলেন ইউল্যাব অ্যাডভেঞ্চার ক্লাবের অ্যাডভাইজর মেহেদী রাজীব, স্টুডেন্ট অ্যাডভাইজর নেধা সাকিবা এবং রিমন খান। ট্যুরটির সার্বিক তত্ত্বাবধানে ছিলেন ইউল্যাব অ্যাডভেঞ্চার ক্লাবের প্রেসিডেন্ট মারজানা ফেরদৌসী, জেনারেল সেক্রেটারি তানভীর মেহেদী, অর্গানাইজিং সেক্রেটারি সুরঞ্জিৎ বিশ্বাস, ফিন্যান্স সেক্রেটারি আরাফাত হোসেন, পাবলিকেশন সেক্রেটারি প্রমা সঞ্চিতা ও ক্লাবের অ্যাডভাইজর মেহেদী রাজীব।
এবারের এ ট্যুরটি ছিল ইউল্যাব অ্যাডভেঞ্চার ক্লাব ও ডিইএ বা ডিউক অব ইডেনবোরাস অ্যাওয়ার্ডের যৌথ সমন্বয়ে আয়োজিত। ডিউক অব ইডেনবোরা অ্যাওয়ার্ডটি প্রদান করা হয়ে থাকে ব্রিটিশ রাজ পরিবারের পক্ষ থেকে। এই অ্যাওয়ার্ডের চারটি শর্ত যারা পূরণ করতে পারবে শুধু তাদেরই এই পুরস্কারটি দেয়া হয়। ডিইএ-এর চারটি শর্ত হল- সপ্তাহে ১ ঘণ্টা কোনো প্রতিষ্ঠানে বা ব্যক্তিগতভাবে কোনো স্বেচ্ছাশ্রমে অংশ নেয়া, কোনো কায়িক শ্রমে নিয়োজিত থাকা, কোনো বিশেষ গুণ বা বিদ্যার চর্চা করা এবং একটি পরিপূর্ণ অ্যাডভেঞ্চার ট্রিপে অংশগ্রহণ। এবারের এই ভ্রমণটির অন্যতম লক্ষ্য ছিল ডিইএ-এর এই ৪র্থ শর্ত পূরণ করা। এই ট্রিপে অংশগ্রহণকারী প্রতিটি সদস্য মনোনীত হবে ডিইএ-এর ব্রোঞ্জ অ্যাওয়ার্ডের জন্য।
চার দিন ও পাঁচ রাতের এই চমৎকার ভ্রমণে শিক্ষার্থীরা আনন্দ ও অ্যাডভেঞ্চারের পাশাপাশি অংশ নিয়েছে বেশ কিছু শিক্ষামূলক কাজেও। শিক্ষার্থীদের তাদের জন্য নির্ধারিত তাঁবুতে থাকতে দেয়া হয়েছে এবং সেটি কীভাবে তৈরি করতে হয় তাও তাদের শেখানো হয়েছে। এ ছাড়া ৮ ভাগে ভাগ হয়ে সবাইকে তাদের জন্য নির্ধারিত দলগত কাজগুলোও করতে হয়েছে। এই ট্রিপের সবচেয়ে আকর্ষণীয় অংশটি ছিল হরিণ দেখতে যাওয়া। কাদামাটি ও লতাপাতার আবরণে ঘণ্টার পর ঘণ্টা কাটিয়ে দিতে হয় হরিণের দেখা পাওয়ার অপেক্ষায়! ভাগ্য ভালো হলে দেখা মেলে হরিণের, নইলে নয়। অনেক সাধ্য-সাধনা করে আমরা দেখা পেয়েছিলাম সেই সোনার হরিণের!
এই ট্যুরের আরেকটি উল্লেখযোগ্য বৈশিষ্ট্য হল পরিবেশের কোনো পরিবর্তন বা ক্ষতি না করে খুব কাছ থেকে প্রকৃতিকে দেখা ও অনুভব করা। আর তাই যেখানে সেখানে পরিত্যক্ত জিনিস বা ময়লা-আবর্জনা ফেলা ছিল একেবারই নিষেধ। ময়লা ফেলার নির্দিষ্ট ব্যাগেই সব ময়লা ফেলা হয়েছে। সবমিলিয়ে শিক্ষা ও অ্যাডভেঞ্চারে ভরপুর চমৎকার চারটি দিন কাটিয়ে ১৩ তারিখ সকালে ঢাকার উদ্দেশে রওনা করে ইউল্যাব অ্যাডভেঞ্চার ক্লাবের প্রাণোচ্ছল ও উদ্যোমী তরুণ-তরুণীর দল।
যেভাবে যাবেন:সন্ধ্যা ৬ টায় সদরঘাট থেকে হাতিয়ার উদ্দেশ্যে লঞ্চ ছাড়ে। দুপুর নাগাদ হাতিয়া পৌছাবে। হাতিয়া থেকে টলার ভাড়া করে নিঝুম দ্বীপ যেতে পারেন। লঞ্চ ভাড়া কেবিন ১০০০,ডাবল ১২০০,ডেক জনপ্রতি ১৭০ টাকা। নিঝুম দ্বীপে গিয়ে সরকারি রেস্ট হাউসে উঠতে পারেন। জনপ্রতি ভাড়া ৫০০ টাকা।
  - See more at: http://www.jugantor.com/out-of-home/2013/09/03/25595#sthash.Wv2aigey.dpuf

কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন